বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৮:৪৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপি দলীয় নারায়ণগঞ্জ – ৪ আসনের সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের পুত্র গোলাম মোঃ কাউছার অরুফে রিফাতকে গ্রেফতার করতে বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৫নং ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার কলাবাগ এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ ও পল্টন থানা পুলিশ।
অভিযানের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান পিপিএম জানান, বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে হত্যা চেষ্টার মামলায় পল্টন থানা পুলিশ ও আমাদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ যৌথভাবে এই অভিযান চালায়। তবে অভিযান চালিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে ৷
গত সোমবারের ঘটনার পর থেকে একটি পক্ষ গিয়াস উদ্দিন পরিবার এ ঘটনার সাথে জড়িত নয় দাবি করে দলের অপর একটি পক্ষকে ফাঁসানোর জন্য অপপ্রচার চালায়। ঘটনার দায়ভার চাপানোর চেষ্টা কর হয় বিএনপি নেতা এড.তৈমুর আলম খন্দকার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রিয়াদ মোঃ চৌধুরী ও আনোয়ার সাদাত সায়েমের উপর। তবে বৃহস্পতিবারের অভিযানের পর থেকে দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। কেউ কেউ বলছে গণেশ উল্টে গেছে। অপপ্রচার চালিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না গিয়াস উদ্দিন ও তাঁর পুত্র রিফাতের।
অন্যদিকে, ঘটনার পরের দিন ফতুল্লার একটি অনুষ্ঠানে গিয়াস উদ্দিন ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার দাবি জানিয়েছেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের মতে, ঘটনার পরের দিন গিয়াস উদ্দিনে ওই বক্তব্য ছিল নিছক স্ট্যান্টবাজী।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে রাজধানীর পুরানা পল্টনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে হত্যা চেষ্টার ঘটনার পরেই স্থানীয়রা হামলাকারী জুয়েল মীরকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোর্পদ করে।আর ঘটনার পর দিন মামুন মাহমুদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় সাগর সিদ্দিকী। ওই ঘটনায় মামুন মাহমুদের স্ত্রী বদরুননাহার বাদি হয়ে আটক জুয়েল মীরকে প্রধান আসামি ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামী করে পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে পুলিশের তদন্তে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের ছোট ছেলে গোলাম মোঃ কাউসার ওরফে রিফাতের নাম উঠে এসেছে।রিফাতের হয়ে খুনি ভাড়া করেন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগি ফতুল্লার বাসিন্দা মোঃ হৃদয়। আর হামলাকারী মোঃ জুয়েল মীরকে মামুন মাহমুদের অফিস ও তার ছবি দেখিয়ে দেয় জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি গ্রেপ্তার দিদার আলম ওরফে সাগর সিদ্দিকী। এদিকে ঘটনার দিন দুপুর থেকে ঘটনাস্থলের অদূরে মুক্তাঙ্গনে নিজের মাইক্রোবাসে অবস্থান করছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেন ও সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারী পল্টু কর্মকার পল্টন থানা পুলিশের তদন্তে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের এসব তথ্য উঠে এসেছে। ঘটনার পর থেকে কাউন্সিলর ইকবাল ও রিফাত পলাতক রায়েছে বলে সূত্রে জানা যায়।এদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্ট পল্টন থানার একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘটনার মাস্টার মাইন্ড রিফাত। তার হয়ে খুনি ভাড়া করে হৃদয়। রিফাত ও হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা গেলে ঘটনার বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। তিন দিনের রিমান্ডে থাকা সাগর সিদ্দিকী পুলিশকে ঘটনার বিষয়ে নানা তথ্য দিচ্ছে। পুলিশ সেগুলো যাচাই বাছাই করে দেখছে।ঘটনার দিন দুপুরে নাসিকের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন ও পল্টু কর্মকার নামে দু’জন একটি মাইক্রোবাসে করে অবস্থান করছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। পুলিশের সন্দেহের তালিকায় কাউন্সিলর ইকবালও রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা৷ এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ মামলাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছে। গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন গিয়াসউদ্দিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গিয়াস উদ্দিন ও তার ছেলেকে পাওয়া যায়নি৷
Leave a Reply