November 30, 2023, 7:42 am
নারায়ণগঞ্জের খবর: নারায়ণগঞ্জে তথ্য গোপন করে চিকিৎসা নেওয়া ও প্রথমদিকে নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি পিপিই সঙ্কটের কারণে ২৭ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) জেলার সিভিল সার্জনের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী ডা. ইকবাল বাহার চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আক্রান্তদের মধ্যে জেলা সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদ ও নারায়ণগঞ্জ তিনশ’ শয্যা হাসপাতালের সুপার ডা. গৌতম রায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাবেক বিএমএ সভাপতি ডা. শাহনেওয়াজ চৌধুরীও রয়েছেন। এছাড়া তিনশ’ শয্যা হাসপাতালে ১৬ জন ও নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের ছয় জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন।
এভাবে চিকিৎসকরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে থাকলে করোনা সংক্রমণে রেড জোন হটস্পট ক্লাস্টার আখ্যায়িত নারায়ণগঞ্জে করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন নাগরিক সমাজ।
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান জানান, এ ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণে নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে। এ সঙ্কট থেকে পরিত্রাণ পেতে চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করতে হবে। একই সাথে রোগীরা নিজেদের তথ্য যাতে গোপন করতে না পারে সেদিকে কঠোর নজরদারী করতে হবে।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানাগেছে, গত ২৯ মার্চ শহরের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভিক্টোরিয়ায়) জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন করোনা আক্রান্ত এক নারী। তাকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে সংক্রমিত হন জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসকসহ তিন স্বাস্থ্যকর্মী।
এছাড়া উপসর্গ গোপন করে আরেক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন জেনারেল হাসপাতালে। ওই রোগীর সংস্পর্শে এসে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আরেক চিকিৎসক সংক্রমিত হন।
জেনারেল হাসপাতালে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে বিভিন্ন সভা ও সেমিনারে সংস্পর্শে আসেন নারায়ণগঞ্জের সাবেক সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদ এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান। তারা দুই জনেরই পরে করোনা পজেটিভ হয়। এদিকে খানপুর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ডাক্তার মিনারা সিকদারসহ মোট ১৬ জন করোনা রোগীর সংস্পর্শে এসে সংক্রমিত হয়েছেন।
অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ বিএমএ এর সাবেক সভাপতি ডাক্তার শাহনেওয়াজসহ তার পরিবারের চার ডাক্তার সদস্য করোনা পজিটিভ হয়েছেন। রোগীরা তাদের তথ্য গোপন করার কারণেই চিকিৎসকদের মধ্যে সংক্রমণের হার বাড়ছে।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, করোনায় আক্রান্ত রোগীরা তথ্য গোপন করে চিকিৎসা নেওয়ায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সংক্রমিত হয়েছেন। প্রথমদিকে চিকিৎকসকদের পিপিই পর্যাপ্ত ছিল না। এটাও একটা কারণ। এখন চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে।
নারায়ণগঞ্জ তিনশ’ শয্যা হাসপাতালের সুপার ডা. গৌতম রায় বলেন, ‘রোগীদের তথ্য গোপন করা একটি বড় সমস্যা। তাদের সংস্পর্শে এসে হাসপাতালের চিকিৎসক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এখন থেকে সতর্কতা আরও বাড়িয়ে কর্যক্রম চালানো হচ্ছে। এতে চিকিৎসা সেবায় কোনো সঙ্কট সৃষ্টি হবে না।’
নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জনের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী ডা. ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমানে জেলায় চিকিৎসকদের পিপিই’র কোনো সমস্যা নেই। ডাক্তারদের চাহিদার তুলনায় বর্তমানে বেশি পিপিই সরবরাহ করা হচ্ছে। বাড়তি সতর্কতা নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি নারায়ণগঞ্জে করোনা মোকাবেলায় আমরা সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারব।’
Leave a Reply