মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০৭:২৪ পূর্বাহ্ন
আবদুর রহিমঃ প্রাচ্যের ড্যান্ডি খ্যাত নারায়ণগঞ্জ এখন গিঞ্জি নগরীতে পরিনত হয়েছে। বসবাসের অযোগ্য হয়ে পরছে ঐতিহ্যের এই নগরী। নারায়ণগঞ্জকে বাসযোগ্য করতে সাধারন মানুষের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের মধ্য থেকেও এখন দাবি উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু রাজনৈতিক কলহ কিংবা ব্যাক্তিগত বিভেদের কারণে জনপ্রতিনিধিরা এখন এক কাতারে এসে কাজ করতে পারছেন না।
নগরীর ফুটপাত আর মায়লার ভাগার নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে। সবাই নারায়ণগঞ্জকে একটি পরিচ্ছন্ন এবং পরিকল্পিত নগরী হিসেবে দেখতে চাইলেও নিজেদের মধ্যকার অনৈক্যের কারণে তা আর হয়ে উঠছে না। নারায়ণগঞ্জের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এবং নগরীকে বাসযোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ অবস্থানে থেকে কাজ করতে হবে বলে মনে করছেন নগর বিশ্লেষকরা।
পাশাপাশি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারেরও ঐক্য হয়ে নগর উন্নয়ণে কাজ করার দাবী জানিয়েছেন। সূত্রমতে, দিনে দিনে নারায়ণগঞ্জ বসবাসে অযোগ্য নগরীতে পরিণত হয়েছে। সংকটের বেড়াজালে জড়িয়ে পরেছে পুরো নগরী। শহরের ফুটপাত দিনের বেশীর ভাগ সময় এখন হকারদের দখলেই থাকে। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা নাটকীয়তা দেখা দিয়েছে। ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছিল। রাজপথের দ্বন্ধ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। কিন্তু তারপরও হকার সমস্যার স্থায়ী কোন সমাধান হয়নি। এখনো হকার ইস্যু নিয়ে নগরীর সর্বত্র চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
অন্যদিকে, শহর ও শহরের প্রবেশ পথে বিশাল আকারে তৈরী হয়েছে ময়লা বাগাড়। শহরের অলিগলিতে দেখা মেলে পচাঁ ময়লার স্তুপ। শহরের প্রবেশ পথ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে ময়লার বাগাড়। শহরের প্রবেশের সময় নাকে রুমাল চেপে নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করতে হচ্ছে নগরবাসীকে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক ময়লার স্তুপের কারণে নগরবাসী এখন অতিষ্ঠ। সম্প্রতি এসব সমস্যা নিয়ে নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বিভেদ দেখাদিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক সভায় জনপ্রতিনিধির মধ্যকার বিভেদ তাদের বক্তৃতার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। সভায় উপস্থিত তিন এমপি নগরীর ফুটপাত আর শহর এবং শহরে প্রবেশ পথে ময়লার বাগাড় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য রেখেছেন। আর এ থেকেই জনপ্রতিনিধিদের মধ্যকার বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। তবে দিনে দিনে বসবাসে অযোগ্য হয়ে পড়া নারায়ণগঞ্জকে বাসযোগ্য করতে হলে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যকার বিরোধ ভুলে জনগণের স্বার্থে কাজ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন নগর বিশ্লেষকরা।
এদিকে, জেলা প্রশাসন হিসেবে রাব্বি মিয়া থাকাকালীন সময়ে লিং রোডে ময়লা ফেলা না হয় সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। তৎকালীন সময়ের ইউএনও হোসনে আরা নিজে উপস্থিত থেকে ময়লা পরিস্কার করাসহ কেউ যেন লিং রোডের পাশে ময়লা না ফেলেন সেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে পুনরায় লিং রোডে ময়লার স্তুপ তৈরী হয়েছে। অপরদিকে, শহরকে হকার মুক্ত করতে সিটি কর্পোরেশনের নীরব ভূমিকায় থাকলেও জেলা পুলিশের অভিযানে শহর অনেকটা হকার মুক্ত হচ্ছে। তবে এব্যাপারে সিটি কর্পোরেশন সহযোগীতা করলে স্থানীয় ভাবে শহরের ফুটপাত হকার মুক্ত করার সম্ভব বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
Leave a Reply