মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০২:০৭ পূর্বাহ্ন
নারায়ণগঞ্জের খবরঃ নব্য আওয়ামী লীগারদের দলে প্রতিষ্ঠিত করার মিশন নিয়ে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে ফতুল্লা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিব ও সাধারন সম্পাদক ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, দলের দীর্ঘদিনের পুরাতন কর্মীদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ফতুল্লায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় নেতাদের নিদের্শ অমান্য করে দলের ভেতরে হাইব্রীডদের স্থান দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট এমন নেতাকর্মীরা জানান, আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিক ভাবে বিতর্কীত করতেই বিএনপি এবং জামাত সমর্থকদের দলে স্থান দেয়ার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে জেলা ও থানা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা আরো সর্তক না হলে আগামীদিনে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নানা বিতর্ক দেখা দিবে।
সূত্রমতে, চলতি মাসে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হবে। কাউন্সিলের মাধ্যমে এ কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল্লাহ বাদল। আর এ লক্ষ্যে থানা আওয়ামী লীগ,ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকরা কাজ শুরু করে দিয়েছে। ইতোমধ্যে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে ঘিরে দল গুছানোর কাজ শুরু হয়েছে। তবে নতুন করে সদস্য নিতে গিয়ে বিএনপি এবং জামাত সমর্থকদের নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া বিএনপি-জামাতের পৃষ্টপোষক হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত বরিশাইল্যা টিপুকে ফতুল্লা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য হিসেবে নাম অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। বাদ পরেছে আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীরা। এ কাজে সম্পৃক্ত রয়েছে ফতুল্লা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিব ও ওসমর ফারকসহ আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা। স্থানীয় মহলে গুঞ্জন চলছে, বরিশাইল্যা টিপুকে ওয়ার্ড কমিটিতে স্থান করে দেয়ার কথা বলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিব টিপুর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার নিয়েছে। আর এ কারণে হাবিব থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারন সম্পাদককে ম্যানেজ করতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। শুধু বরিশাইল্যা টিপুই নয়, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে যোগদানকারী মোস্তফা কামালও আওয়ামী লীগের কমিটিতে প্রবেশ করতে চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতার কাঁধে ভর করে তিনি আওয়ামী লীগের কমিটিতে প্রবেশ করতে চাচ্ছেন বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মীর অভিযোগ। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদ আকড়ে আছেন সাবেক জামাত নেতা জলিল মাদবর। সম্প্রতি তার জামাত সম্পৃক্ততার খবরে তোলপাড় শুরু হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানাগেছে, ফতুল্লা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিব ২০০১ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোটের প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের হয়ে কাজ করেছে। গিয়াস উদ্দিন এমপি হওয়ার পর হাবিবসহ তার অনুসারী সিদ্ধিরগঞ্জে গিয়ে গিয়াস উদ্দিনকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান। এ ছাড়াও ফতুল্লা পাইলট স্কুল সংলগ্ন বাইতুর নুর জামে মসজিদের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকালে মজিদের জমি নিজের নামে লিখে নেয়। যা পরবর্তীতে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলীর হস্তক্ষেপে মসজিদের জায়গা মসজিদের নামে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া মসজিদের সামেনর দোকান থেকে অগ্রিমের নাম করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে দোকানীদের আর ফেরত দেয়নি বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। আর এসব কারণে মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী হাবিবকে মসজিদের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়। এছাড়া সারাহ বেগম কবরী এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর হাবিব কবরীর আস্তাভাজন হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেন।
এ ব্যাপারে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল বলেন, ২০০৮ সালের পর যারা আওয়ামী লীগে যোগদান করেছে তারা দলের সাধারন সদস্য থাকতে পারবেন, কিন্তু তাদের আওয়ামী লীগের কোন কমিটিতে স্থান দেয়া হবে না।
Leave a Reply