বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৪ অপরাহ্ন

বাতাসে ভেসে থাকে করোনা ভাইরাস

নারায়ণগঞ্জের খবর ডেস্ক: প্রথম দিকে মনে করা হতো- করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বের হওয়া জলীয় কণার মাধ্যমে অন্যজনের শরীরে প্রবেশ করে। তবে ভাইরাসটি যে বাতাসে ভেসে থাকার ক্ষমতা আছে তার প্রমাণ পেয়েছে চীনের গবেষক দল।

হাওয়ার মাধ্যমেও ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস। চীনের উহান হাসপাতালে হাওয়ার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ানোর লক্ষ্মণ পেয়েছেন সে দেশের বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, হাসপাতালগুলি থেকে নেওয়া হাওয়ার নমুনার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার মধ্যে নতুন করোনাভাইরাসের জিনগত বৈশিষ্ট্যের (আরএনএ) উপস্থিতি মিলেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানাচ্ছে, বাতাসের ওই কণাগুলোর বেশিরভাগেরই ব্যাস এক ইঞ্চির দশ হাজার ভাগের এক ভাগেরও কম। করোনাভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ছড়াতে পারে, এ ধারণার পক্ষে চীনের বিজ্ঞানীদের এই তথ্যকে শক্তিশালী প্রমাণ বলা হচ্ছে।

এর আগে বিভিন্ন পরীক্ষাগারে করা গবেষণায় করোনাভাইরাস বাতাসে থাকতে পারে বলে প্রমাণ মিললেও চীনের বিজ্ঞানীরা হাতে আসা এই নমুনা নেওয়া হয়েছে বাস্তব পরিস্থিতি থেকে। সম্প্রতি নেচার বলে একটি পত্রিকাতে চীনের বিজ্ঞানীদের এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।

প্রকাশিত তথ্যে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তারা যে নমুনা সংগ্রহ করেছেন সেখানে থাকা ভাইরাস সংক্রামক কিনা তা এখনো জানা যায়নি, তবে ক্ষুদ্র এ তরলকণাগুলো সহজেই ব্যক্তির নিঃশ্বাসের সঙ্গে ও কথা বলার সময় নির্গত হতে পারে। কণাগুলো ভাসতে পারে ও শ্বাসের মাধ্যমে অন্য জনের শরীরে ঢুকেও পড়তে পারে বলেও জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

নেচারের ওই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও ভার্জিনিয়া পলিটেকনিক অ্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটির সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক লিনসে মার বলেছেন, “তরলকণাগুলো অন্তত দুই ঘণ্টা বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। আর এই গবেষণাতে জোরালো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, ভাইরাসটির বায়ুর মাধ্যমে ছড়ানোর সম্ভাবনা আছে।”

নতুন করোনাভাইরাসটি যে এরোসল নামে পরিচিত অতি ক্ষুদ্র তরলকণার মাধ্যমে ছড়াতে পারে, এমন প্রমাণ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন মার ও অন্য আরও অনেক বিজ্ঞানী। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এখনও পর্যন্ত বাতাসের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনাকে গুরুত্ব দেয়নি। তারা বলছে, বাতাসে বেশিক্ষণ ভাসতে পারে না এমন বড় বড় তরলকণার মাধ্যমেই ভাইরাসটি ছড়াতে পারে অথবা সংক্রমিত কোনও কিছু ছোঁয়ার মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

চীনের বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণাতেও এরোসলে থাকা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটানোর মতো সক্ষমতা আছে কি না, নাকি তাদের পরীক্ষায় ভাইরাসের নির্বিষ খণ্ডাংশ পাওয়া গিয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

“ভাইরাসের প্রতিলিপির জন্য অনুপস্থিত খণ্ডাংশটি গুরুত্বপূর্ণ,” মন্তব্য করে স্ট্যান্ডিং কমিটি অব ইমার্জিং ইনফেকশাস ডিজিজ এর প্রধান হার্ভি ভি. ফাইনবার্গ প্রশ্ন রাখেন, “বাতাস থেকে কী আপনি এই ভাইরাসটি উৎপাদন করতে পারবেন?”

উহানে এ গবেষণায় চীনের বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন থাকার জায়গা ও সুপারমার্কেটের বাতাসে ভাইরাসের উপস্থিতি পাননি। তবে দুই হাসপাতালের একটির বাইরে ভিড়ঠাসা এলাকা ও কয়েকটি ডিপার্টমেন্ট স্টোরের বাতাসেও সামান্য মাত্রার ভাইরাস পেয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন...

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Comments

    © All rights reserved © 2023
    Design & Developed BY M Host BD