রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন

সেই রাতের লাশ গুলো কোথায় গেল- জামায়াতের আমীর

প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ:
স্বৈরাচার বিরোধী এই আন্দোলনে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ আহত-নিহত হয়েছে। এই জাতি আজীবন তাদের কাছে ঋনী মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমার আফসোস এই যুদ্ধের শহীদদের মধ্যে আমি একজন হতে পারলাম না। এই সৌভাগ্য আল্লাহ যাদেরকে দান করেছে তাদের জন্য আমার ইর্ষা হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে না’গঞ্জের শহীদ পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতের আমীর বলেন, বিভিন্ন হাসপাতালে আহত ভাইদের দেখতে গিয়েছিলাম, কালিজা ফেটে গেছে। এক ভাইয়ের দুই চোখে গুলি লেগে অন্ধ হয়ে গেছে, সে তো আর এই দুনিয়ার আলো দেখবে না। এদের মা-বাবাকে আমরা কি শান্তনা দিবো। কত মায়ের বুক তারা খালি করেদিলো, একটা বারও কি তারা চিন্তা করলো না। রাজশাহী গিয়ে ছিলাম। শুনতে পারলাম, আন্দোলনে এক রিকশাচালক ভাই কলসিতে পানি ও গ্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের পানি খাওয়াতে বেড়িয়েছিলো। এক পর্যায়ে হটাৎ পর পর তিনটা বুলেট তারা দেহ ভেদ করে চলে যায়। সে বিয়ে করেছিলো মাত্র এক বছর, তার স্ত্রী ৬ মাসের গর্ভবতী। সে আমাকে বললো, আমি নিজেকে নয় আমি আমার গর্ভের সন্তান নিয়ে চিন্তিত। আমি বললাম, তোমাদের আল্লাহই পথ দেখাবেন। আর মানুষ হিসেবে আমরা পাশে থাকবো। প্রতিমাসে তোমাদের সম্মানের সহিত চলার মতো একটি অংশ তোমাদের কাছে পৌছে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের সাথে বসেছিলাম। আমরা বলেছি, যেই পরিবারগুলোর আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন আপনারা তাদের, আপনারা সহযোগিতা করুন। আহতদের জন্য যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করুন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। সকলেই বলছে এটা আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। আমার দৃষ্টিতে এটা আমার তৃতয়ি স্বাধীনতা। ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪। এই তৃতীয় স্বাধীনতার বীর’দের বীরত্বগাথা আমাদের পাঠ্যপুস্তক সহ সকল জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্থান করে দিতে হবে। এটা তাদে পরিবারের চাহিদা নয়, এটা আগামী প্রজন্মের চাহিদা। তারা যাতে জানতে পারে, তাদের পূর্বের যুবকরা জালেমের সামনে বুক পেতে দিয়ে দাড়িঁয়ে ছিলো। তারা বলেছিলো, বুকের ভেতর তুমুল ঝর, বুক পেতেছি গুলি কর। একটি জাতি যেখানে দাঁড়ায় যায়, কোন স্বৈরাচার সেখানে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। সেই রাত গুলোতে অনেক অপকর্ম হয়েছে। যেমনটা হয়েছিলো ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে। সেই রাতের লাশ গুলো কোথায় গেল? জানি না। আসুন সকল শোককে আমরা শক্তিতে রুপান্তরিত করি।
নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন এর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মঈন উদ্দিন আহমদ, ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম, জেলা আমির মুমিনুল হক, মহানগরীর নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল কাইয়ম, মহানগরীর সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবির নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সভাপতি আসাদুজ্জামান রাকিব প্রমুখ।
নিউজটি শেয়ার করুন...

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Comments

    © All rights reserved © 2023
    Design & Developed BY M Host BD