নিজস্ব প্রতিবেদক: এক বছর সাত মাস পর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার অটোরিকশা চালক শাকিল হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। একই সঙ্গে শাকিলের চুরি হওয়া অটোরিকশা উদ্ধার করে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৪০০ টাকায় কেনা মোবাইলের সূত্র ধরে দেড় বছর পর শাকিল হত্যাকাণ্ডের রহস্য জানা যায়।
গত বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। এ ঘটনায় গ্রেফতাররা হলেন- রূপগঞ্জের আরিফ চৌধুরী (৩১), রূপগঞ্জের তারাবোর আরব আলী (২৩) ও ময়মনসিংহের আমিনুল ইসলাম (২৫)।
পিবিআই জানায়, মাত্র ৪০০ টাকায় একটি মোবাইল কিনেছিলেন সোহানা। দীর্ঘ দুই বছর পর সেই মোবাইলের খোঁজে ঘরের দরজায় কড়া নাড়ে পিবিআই। সোহানার দেয়া তথ্যে বেরিয়ে এসেছে মোবাইল বিক্রেতা আমিনুল ইসলামের নাম। পরে আমিনুলের সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয় তার সহযোগী আরিফ চৌধুরী ও আরব আলীকে। তাদের দেয়া জবানবন্দিতে বেরিয়ে আসে সোনারগাঁয়ের অটোরিকশা চালক শাকিল হত্যার রহস্য।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর সোনারগাঁয়ের গজারিয়া পাড়ার রাস্তার পাশ থেকে শাকিলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ১৩ নভেম্বর এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় মামলা করেন শাকিলের বড় ভাই মো. সজীব। ১৩ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলাটি তদন্ত করে সোনারগাঁ থানা পুলিশ। পরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে পিবিআইয়ের কাছে মামলাটি হস্তান্তর করা হয়।
২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি থেকে মামলাটির তদন্ত শুরু করে পিবিআই। তদন্তের পাশাপাশি বিজ্ঞানভিত্তিক ও তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় এক বছর সাত মাস পর অটোরিকশা চালক শাকিল হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করে পিবিআই।
এদিকে, শাকিল হত্যার রহস্য জানার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন শাকিলের মা-বাবা ও বড় ভাই। এ হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়েছেন তারা।
পিবিআইয়ের নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, হত্যার সাত থেকে আটদিন আগে শাকিলের সঙ্গে গাউছিয়া স্ট্যান্ডে পরিচয় হয় হত্যাকারীদের। তখন আরিফ চৌধুরী নতুন বিয়ে করায় অর্থ সঙ্কটে ভুগছিলেন। আমিনুল ইসলাম টাকার লোভে পড়েন। ঘটনার দিন বিকেলে শাকিলকে ফোন দেন আরিফ। শাকিল অটোরিকশা নিয়ে গাউছিয়ায় আসার পর সোনারগাঁয়ের তাজমহল এলাকায় যাওয়ার কথা বলে রিকশায় উঠেন আরিফ ও আমিনুল। গজারিয়া পাড়ার রাস্তার পাশে যেতেই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শাকিলকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে গলায় মাফলার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে শাকিলের দুই চোখে আঘাত করা হয়। পরে শাকিলের পকেটে থাকা টাকা, মোবাইল ও অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যান। অটোরিকশা ৯ হাজার টাকা ও মোবাইল ৪০০ টাকায় বিক্রি করেছিলেন তারা। আরব আলী চোরাই অটোরিকশা কেনার অপরাধে গ্রেফতার হন।