September 23, 2023, 5:18 pm
নারায়ণগঞ্জের খবরঃ ফতুল্লার সরকারী জ্বালানী তেল ডিপো যমুনা-মেঘনা কে কন্দ্রে করে ঢাকা-নারায়নগঞ্জের সড়ক পথে সক্রিয় রয়েছে বহু সংখ্যক চোরাই তেল কারবারী। যমুনা-মেঘনা ডিপোর একাধিক কর্মকর্তা,সরকার দলীয় স্থানীয় নেতা,ক্যাডার, হোমড়া-চোমড়া ও মালিক-শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে গড়ে উঠা চোরাই তেল সিন্ডিকেট অবৈধ উপায়ে জ্বালানী তেল সংগ্রহ করে তা খোলা বাজারে বিক্রি করে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আইন-শৃংখলা বাহিনী মাঝেমধ্যো লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে দু-চার চোরাই তেল কারবারীকে আটক করতে সক্ষম হলে ও সিন্ডিকেটের মূল হোতারা রয়ে যায় ধরা ছোয়ার বাইরে। ফলে ডিপো দুটোর জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রতিদিন ডিপো দুটি থেকে লাখ লাখ টাকার জ্বালানী তেল পাচার হয়ে যাচ্ছে কালোবাজারীদের নিকট। টোকাই থেকে কোটিপতি হয়ে গেছে অনেকেই।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র মতে, যমুনা ট্যাংক মালিক সমিতির সভাপতি রহমতউল্লাহ ভান্ডারী, সালাউদ্দিন(তেল চোরা আফসুর ভাই),মেঘনা ডিপোর সভাপতি আফসু ওরফে তেল চোরা আফসু, মোকলেস, পল্টি দেলু, ইকবাল চৌধুরী, রুবেল,রিপন, শাহিন, হিরু, ডলফিন দেলু ওরফে ইস্ত্রারী দেলু, পাগলার মেয়ের জামাই ইব্রাহিম, পাভেল, আলামীন, নুরা সেক্রেটারীর ভাই সালাম, যমুনা ডিপো সংলগ্ন তিতাস মার্কেটের দোকানী আলেকের ছেলে রুবেল, লোকমান হোসেন সহ পুরো চক্রটি দিনরাত ২৪ ঘন্টা পালাক্রমে জ্বালানী তেল চুরির কারবার চালিয়ে যাচ্ছে কয়েক যুগ ধুরে।
যমুনা-মেঘনা ডিপোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা কালোবাজারী চক্রটি প্রতিদিন ডিপো দুটোর গেইট সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করে প্রকাশ্যেই তেলবাহী ট্যাংক লড়ী থেকে নিয়ে নিচ্ছে ডিজেল,কোরোসীন,পেট্রোল,অকটেনসহসকল প্রকার জ্বালানী তেল।অপরদিকে রাত ১০ টার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত নদীতে থাকা তেলবাহী জাহাজ থেকে কালোবাজারী চক্র নিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার লিটার জ্বালানী তেল।
কালোবাজারী চক্রটি কে যমুনা-মেঘনা ডিপোর ইউনিয়নের নেতা এবং সরকারদলীয় রাজনৈতিক নেতারা নানা ভাবে শেল্টার দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়,তেল চুরির রমরমা টাাকায় এই চক্রটির সকলেই মদ,নারী,জুয়া সহ সকল প্রকার অপরাধের সাথে জড়িত থেকে কলুষিত করে তুলেছে ফতুল্লার পরিবেশ। নাম প্রকাশ করার না শর্তে কালোবাজারী চক্রের এক সদস্য জানায়,ফতুল্লা ও সিদ্বিরগঞ্জের প্রায় শতাধিক ব্যাক্তি সরকারী জ্বালানী তেল ডিপোগুলো থেকে জ্বালানী তেল চুরির সাথে সরাসরি জড়িত। কোটি কোটি টাকার তেল চুরি করে কালো বাজারী চক্রের অনেকেই আজ হয়ে উঠেছে কোটিপতি, সম্পদশালী বিশাল অট্রালিকার মালিক। কেউ কেউ আবার সমাজপতি হবার নেশায় মেতে উঠেছে।
সম্প্রতি রহমত উল্লাহ ভান্ডারীর ছেলে রনি বিপুল পরিমান জ্বালানী চোরাই তেল সহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলো। কিছুদিন কারাগারে আটক থাকার পর জামিনে বেরিয়ে এসে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে চোরাই জ্বালানী তেল কারবারীতে। তাছাড়া রহমত উল্লাহ ভান্ডারীর মেয়ের জামতা রাসেল ও জড়িত রয়েছে এই কারবারে। জ্বালানী চোরাই তেল কারবারের আরেক প্রভাবশালীি সালাউদ্দিনের বিরুদ্বে রয়েছে পুলিশ পেটানোর অভিযোগ। নাম প্রকাশ করার না শর্তে স্থানীয় একজন জানায়, এই তেল চুরির লাভাংশ্যের বিশাল একাট অংশ চলে যায় সরকারদলীয় একাধিক নেতার পকেটে।
অপর একটি সূত্র জানায়, জেলা ডিবি পুলিশ ও র্যাবের সোর্স পরিচয় বহনকারী আনোয়ার ওরফে সোর্স আনোয়ারের রয়েছে একাধিক জ্বালানী তেলের দোকান। তাছাড়া ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জের প্রতিটি চোরাই জ্বালানী তেলের দোকান থেকে নিয়মিত মাসোহারা গ্রহন করে থাকে এই সোর্স আনোয়ার। বর্তমান সময়ে সবচাইতে প্রভাবশালী চোরাই তেল কারবারী হিসেবে সোর্স আনোয়ার রয়েছে সবার শির্ষে। ঢাকা-নারায়নগঞ্জ মহাসড়কের জালকুড়ি এলাকায় দুইটি, রুপগঞ্জের তিনশ ফিটে একটি, কাঞ্চন ব্রীজ এলাকায় একটি, রুপসী-বরপা সড়কে একটি, কাচপুরে একটি সহ জেলার বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি জ্বালানী চোরাই তেলের দোকান রয়েছে সোর্স আনোয়ারের।
Leave a Reply