September 26, 2023, 6:47 am
নারায়ণগঞ্জের খবর: শনিবার ঈদুল আজহার দিনেও রায়হানের মা রাশিদা বেগম ছেলের ছবি বুকে নিয়ে কান্না করছিলেন। ছেলের সঙ্গে কথা বলা ছাড়াই এই প্রথম উৎকণ্ঠায় ঈদ পার করলো তার পরিবার।
বিদেশি শ্রমিকদের ওপরে নির্যাতনের বিষয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরায় সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক রায়হান কবির। এই অভিযোগে গত ২৪ জুলাই তাকে আটক করেছে সে দেশের পুলিশ। এরপর ৯ দিন পার হয়ে গেলেও রায়হানের সঙ্গে কথা হয়নি বাংলাদেশে অবস্থানরত তার পরিবারের। রায়হান গ্রেফতার হওয়ার দুইদিন আগে অর্থাৎ গত ২২ জুলাই তার সঙ্গে কথা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তার বাবা শাহ্ আলম। ছেলের অপেক্ষায় দিন গুনছে তার পরিবার।
রায়হানের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘একটা ঈদের দিন গেলো, ছেলেটা কী অবস্থায় আছে আমরা কিচ্ছু জানি না। আমরা তার অপেক্ষায় আছি। প্রতি ঈদেই তার সঙ্গে কথা হতো। আমাদের এখানে পরদিন ঈদ হয়, রায়হানের ওখানে আগের দিন। আমাদের সঙ্গে প্রত্যেক ঈদে কথা হয়েছে। এই প্রথম কোনও ঈদে কথা বলতে পারিনি তার সঙ্গে। ঈদের আগের দিন এবং ঈদের দিন দুই দিনই যোগাযোগ করতো। এবার কী বলবো আর।’
শাহ্ আলম আরও বলেন, ‘রায়হানের মা সারা দিন কান্না করে। তার ছবি দেখে দেখে কান্না করে। ছেলের সঙ্গে কথা হলো না। কোথায় আছে, কী খাচ্ছে— এই চিন্তা করে সারা দিন। আমাদের এবার ঈদ কিছুই হয় নাই, সারা দিন কাঁদতে কাঁদতেই গেছে। ছেলেকে নিয়েই ঈদ করবো এই আশায় আছি আমরা।’
প্রসঙ্গত, গত ৩ জুলাই ‘লকডআপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট’ শীর্ষক একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে আলজাজিরা টেলিভিশন। এতে দেখানো হয়—মালয়েশিয়া সরকার মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (এমসিও)-এর মাধ্যমে মহামারির সময়ে অভিবাসীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। সেখানে রায়হান কবিরের একটি ইন্টারভিউ সম্প্রচারিত হলে সে দেশের অভিবাসন বিভাগ তাকে হন্য হয়ে খোঁজা শুরু করে। তার ছবি প্রকাশ করে তারা রায়হানের বিষয়ে তথ্য জানানোর অনুরোধ করে। এছাড়া প্রতিবেদনের সঙ্গে আলজাজিরার সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা। এরপর ২৪ জুলাই রায়হান কবিরকে গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। গ্রেফতারের পর সে দেশের দুই জন আইনজীবী তার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চান পুলিশের কাছে। কিন্তু প্রথমে অনুমতি না পেলেও পরে অনুমতি পান তারা। রায়হান আইনজীবীদের জানান, তিনি যা দেখেছেন তা-ই বলেছেন। এতে যদি সে দেশের সরকার বা কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তাহলে তিনি তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। এ সময় রায়হান কবির ওই আইনজীবীদের কাছে দ্রুত দেশের ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
Leave a Reply