June 9, 2023, 3:53 am
নারায়ণগঞ্জের খবরঃ পুলিশের কোন সোর্স থাকবে না পুলিশ সুপারের এমন বক্তব্যের পরও থেমে নেই ফতুল্লার মাদক ব্যবসা। ফতুল্লার বিশাল একটি অঞ্চলের মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছে আলোচিত ডাকাত এবং পুলিশের কথিত সোর্সরা। দীর্ঘদিন ধরে বিশাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই অঞ্চলের মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে এসব ডাকাত এবং সোর্সরা। জেল হাজত থেকে ছাড়া পেয়ে অনেকে এই সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়েছে বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে। যারা মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক ডাকাতি, হত্যা,পুলিশের উপরে হামলা ও মাদকের মামলা। আর এই সিন্ডিকেটকে নানা ভাবে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে বিশেষ পেশার বেশ কিছু ব্যাক্তির বিরুদ্ধে।
সূত্রমতে, পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম নারায়ণগঞ্জে যোগদানের পর সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বলেছিলেন, পুলিশের কোন সোর্স থাকবে না। তিনি নারায়ণগঞ্জবাসীকে শতভাগ সেবা দিবেন। তার ঘোষণার পরও ডাকাত ও সোর্সরা পুলিশকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে তাদের মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এরফলে পুলিশের ইমেজ ক্ষুন্ন হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে এসব মাদক ব্যবসায়ী ডাকাত ও সোর্সদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী বলে মনে করছেন ফতুল্লার সচেতন মহল। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, ফতুল্লা রেলস্টেশন ব্যাংক কলোনী এলাকার রনি যিনি নিজেকে পুলিশে সোর্স পরিচয় দিয়ে পুলিশের কিছু কর্মকর্তাও সাথে সখ্যতা রেখে মাদক ব্যবসা করতেন। সর্বশেষ র্যাব সদস্যদের হাতে বিপুল পরিমান মাদকসহ গ্রেফতারের পর গত এক মাস আগে জামিনে এসে মালয়েশিয়ায় চলে যায়। তবে রনি বিদেশে পালিয়ে গেলেও তার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তার স্ত্রী সালমা এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। অপর একটি সূত্র জানায়, রনির নিয়ন্ত্রিত এলাকার মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বেপারী পাড়া এলাকার সুকানী সুমন অরুফে সোর্স সুমন। আল্পনা নামের অপর এক মাদক সম্রাজ্ঞীকে বিয়ে বর্তমানে স্টেশনের পুরাতন ক্যালিক্স স্কুলের গলিতে অবস্থান নিয়ে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে।
অন্যদিকে, পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে ডাকাত লিপু অরুফে বোমা লিপু নিহত হওয়ার পরও এই বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা এখনো মাদক ব্যবসা অব্যাহত রেখেছে। নিহত লিপুর মাদক ব্যবসা পর্দার আড়াল থেকে নিন্ত্রয়ণ করছে লিপুর ভাই ডাকাত শাহিন ও ডিসান। এছাড়া পুলিশ সোর্স আইনুল, সোর্স পান্না, সোর্স সোহাগ, সোর্স মাথা মোটা বাবুল, সোর্স সুকানী সুমন, টিকিমারা লিটন অরুফে ডাকাত লিটন, ডাকাত কবির হোসেন ফেলার (ফেলা মাদক মামলায় বর্তমানে কেরানীগঞ্জে জেলে রয়েছে) লোকজন পৃথক পৃথক স্থান থেকে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। আর এই সিন্ডিকেটের আওতায় রয়েছে লালখার শামীম, রাজিব, সম্রাট, বোন স্বপ্না, রাসেল, পাইলটস্কুল বেপারী পাড়ার রবিন, সুকানী সুমন,বাংলা খোকনের পুত্র সোহান, স্টেশনের মাইছ্যা সোলমানের পুত্র রুবেল,ওলুর ছেলে শুভ ওরুফে বাবা শুভ(বর্তমানে জেল হাজতে), জনি অরুফে চোরা জনি,পারভেজ অরুফে হাক্কানী পারভেজ, বিথী, শুভ ওরুফে লম্বু শুভ,মাইছ্যা শাহজাহানের পুত্র শাহজুল, মাইছ্যা শাহজাহানের স্ত্রী নাসরিন, পুত্রবধূ নাসিমা, মেয়ে স্মৃতি,জামাতা বাদল(টেকনাফের শীর্ষ ব্যবসায়ী), পিচ্ছি রাজু, ফাহিম, স্ত্রী লাকি, পুত্র রবিন, রেইনবোর মোড় এলাকার জনু, ইকবাল, মানু, ডাকাত রেহান, রাজিবসহ প্রায় অর্ধশত মাদক ব্যবসায়ী। এদের কাউকে আবার পুলিশের সাথে বিভিন্ন অভিযানে দেখা যায়। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানাগেছে, সোর্স পান্না এবং সোর্স সোহাগ নিজেদের স্বার্থ হাসিলে থানা ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বেশ কিছু সদস্যদের সাথে সখ্যতা রেখে প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের আড়াল করতে বেশ কিছু সেলসম্যান ও মাদক সেবীদের মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। অপর একটি সূত্র জানায়, স্টেশন এলাকার বিদ্যুৎ পাল স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী এবং ব্ল্যাক মেইলিং গ্রুপের কাছ থেকে মাসোয়ারা নিয়ে থাকেন। বিদ্যুৎ পালে নেতৃত্বে বিশাল একটি বাহিনী স্টেশন এবং ব্যাংক কলোনী এলাকায় নানা অপরাধের সাথে জড়িত রয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলামা হোসেন জানান, আমরা মাদক ব্যবসায়ী কিংবা কোন অপরাধীকে ছাড়া দিচ্ছি না। আমরা সমাজকে মাদক মুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা বেশ কিছু অস্ত্রবাজ, মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
Leave a Reply