নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাভাবিক মৃত্যুর পর ও করোনার ভয়ে লাশ দাফনে এগিয়ে আসেনি আত্নীয়- স্বজন,পাড়া প্রতিবেশী সহ এলাকাবাসীর কেউ।প্রায় ৮ ঘন্টা পর ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের প্রচার সম্পাদক ও যুগান্তর প্রতিনিধি সাংবাদিক আলামিন প্রধান নিজ উদ্দ্যেগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে মৃত দেহ দাফনের ব্যবস্থা করেন।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মোকলেছার (৫৫) নামে এক ডাইং কারখানার শ্রমিক শবেবরাতের রোজা রাখা অবস্থায় হঠাৎ বুকে ব্যাথা উঠে নিজ ঘরেই মারা যান। স্ত্রী ও তিন শিশু সন্তানের আহাজারিতে বাড়িওয়ালাসহ আশপাশের কারো মন ছুটেনি একটু সহযোগিতার হাত বাড়াতে। দুপুর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত লাশ নিয়ে ঘরেই বসে ছিলেন নিহতের পরিবার। অবশেষে যুগান্তর প্রতিনিধি সাংবাদিক আলামিন প্রধানের উদ্দ্যেগে রাত ১১ টায় স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। শুক্রবার দুপুরে ফতুল্লার সস্তাপুর গাবতলা এলাকায় এঘটনা ঘটে।
নিহত মোকলেছার নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর থানার খাতামধুপুর ঠনঠনিপাড়া গ্রামের তফেল মামুদের ছেলে। সে ফতুল্লার সস্তাপুর এলাকায় নুর ইসলামের বাড়িতে স্ত্রী ও তিন শিশু সন্তান নিয়ে ভাড়ায় বসবাস করে একটি ডাইং কারখানায় কাজ করতেন।
নিহতের স্ত্রী লাইলী জানান, তার স্বামী মোকলেছার শবেবরাতের তিনটি রোজা রেখেছেন। বুধবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রেখেই ডাইং কারখানায় কাজ করেছে। শুক্রবার তৃতীয় রোজা রেখে ছিলেন এদিন কারখানাও বন্দ ছিলো তাই বাসায় ছিলেন তিনি। হঠাৎ দুপুরে সে আমাকে ডেকে বলছে আমার বুকটা ব্যাথা লাগছে বলেই বিছানায় শুয়ে পড়েন। এরপর অনেক ডাকাডাকি করেও কোন সারা শব্দ পাইনি। তখন কান্নাকাটি করে বাড়িওয়ালাকে ডাকি কিন্তু কেউ আসেনি। আমার শিশু সন্তানরাও অনেককে ডেকেছে কেউ আসেনি। পরে আমার ভাসুর এসে রাত ১০টায় স্থানীয় সাংবাদিক আলামিন প্রধানের কাছে গিয়ে মৃত্যুর খবর জানান।
স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার ওই বাড়ির সামনের বাড়িতে মহিউদ্দিন নামে একজন ব্যবসায়ী করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন। তার লাশ হাসপাতাল কতৃর্পক্ষই দাফন করেছে। এ মুহুর্তে পাশের বাড়িতে আরেকজন ব্যাক্তির মৃত্যুতে অনেকেই ভয়ে কাছে যায়নি।
সাংবাদিক আলামিন প্রধান বলেন, খবর পেয়ে নিহতের পরিবারের সাথে কথা বলে জানতি পারি নিহত ব্যাক্তি কোন রোগে আক্রান্ত ছিলেন না। রোজা অবস্থায় বুকে ব্যাথা উঠে সে মারা যায়। বিষয়টি সদর ইউএনও নাহিদা বারিক ও ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেনকে জানানো হয়। তারা লাশটি দাফনের জন্য আমাকে অনুরোধ করেন। এরপর ইউএনও নাহিদা বারিকের সার্বিক সহযোগিতায় শুক্রবার রাত ১১টায় সস্তাপুর-কোতালেরবাগ কবরস্থানে দাফন করা হয়। স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা উজিউল্লাহ জানাযার নাম পড়ান।
ইউএনও নাহিদা বারিক জানান, নিহতের পরিবারের কাছে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে আরো সহযোগিতা করা হবে।
তিনি আরো জানান, করোনা ভাইরাস থেকে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। তবে পার্শ্ববর্তী কেউ বিপদে পড়লে তাকেও যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করতে হবে। সদর উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষনিক যেকোন সহযোগিতায় সকলের পাশে আছে। কিন্তু সবাইকে ঘরে থাকতে হবে খাবার ওষুধ প্রয়োজন হলে আমার নাম্বারে ফোন করুন আমি পৌছে দিবো।
Leave a Reply