স্টাফ রিপোর্টারঃ করোনা পরিস্থিতি নিয়ে থানা পুলিশ যখন ব্যস্ত রয়েছে আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। থানা পুলিশের কথিত সোর্সরা মাদক ব্যবসায়ীদের সরাসরি মদদাতা হিসেবে কাজ করছে এমন অভিযোগ সচেতন মহলের। ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা এসব সোর্সদের সাথে সখ্যতা রেখে মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে। বিশেষ করে মাদকের সুরক্ষিত গোডাউন বলে পরিচিত ফতুল্লার আলীগঞ্জ এলাকায় মাদক মাদকের নিরাপদ ঘাটিতে পরিনত হয়েছে। প্রতিটি অলিগলিতে হাত বাড়ালেই মিলছে হেরোইন ,গাজাঁ, ফেনসিডিল ,যৌন উত্তেজক নিষিদ্ধ ইয়াবা ট্যাবলেট সহ নানা প্রকার মাদকদ্রব্য।
সহজলভ্য হয়ে উঠা মাদক বিক্রেতা বা মাদক ব্যবসায়ীদের কে সরকারদলীয় স্থানীয় নেতা ও স্থানীয় প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তারা শেল্টার দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়বাসীর। অল্প পুজিঁ অধিক লাভ রাতারাতি কোটিপতি হবার স্বপ্নে বিভোর থেকে মাদক বিক্রির মতো জঘন্যতম অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে নতুন করে অনেকেই।
ফতুল্লা থানাধীন আলীগঞ্জে নিয়মিত বসে মাদকের হাট,সকাল থেকে রাত অবধি চলে মাদক বেঁচা-কেনা।আলীগঞ্জের মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছে ডেনী, সোর্স আয়নাল ওরফে আইনু,সোর্স রাসেল ওরফে ছল্টু রাসপল,সোর্স বগি সাইদ জং বাড়ির লম্বা জুয়েল(ক্যাপ জুয়েল),সল্টু রাসেল,খুকি মেম্বারের ভাই কবির,রাশু ওরফে রাসেল,মস্তাকিন,বগি সাঈদ, হেলালের ভাই জালাল,সুন্দর জুয়েল সহ আরোও অনেকেই।
আলীগঞ্জ মেইনরোড থেকে শুরু করে রেললাইন পর্যন্ত চলছে দিবা-রাত্রি মাদক বেঁচা-কেনা। মাদক বিক্রিতে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েজনের শেল্টারের পাশাপাশি আর্শীবাদ রয়েছে ফতুল্লা থানার একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা।
সোর্স আয়নু কে সফল মাদক ব্যাবসায়ী বলেও উল্লেখ করেন অনেকেই,থানাপুলিশের সাথে সখ্যতার কারনে নিরাপদেই মাদক ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছেন এই মাদক ব্যাবসায়ী। গাড়ির মিস্ত্রি থেকে মাদক ব্যাবসায়ী বণে যাওয়া আয়নু ইতোমধ্যে আলীগঞ্জে দুটি বাড়ির মালিক বণে গেছে। শুধু বাড়িই নয়,একাধিক নারী হয়েছে এই মাদক ব্যাবসায়ীর।মাদক ব্যাবসায় সফলতা অর্জন করে দুই স্ত্রীকে আলাদা-আলাদা বাড়িও করে দিয়েছে আয়নু।নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র মতে,মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সময়ে মাদক ব্যবসাশী বিশেষ করে সোর্স আইনু, ছল্টু রাসেল ও কবিরের মাঝে দ্বন্ধের সৃস্টি হয়।
ঈদের কয়েকদিন পূর্বে ফতুল্লা থানা পুলিশ আলীগঞ্জ থেকে তরাশ নামক এক ব্যক্তিকে ৩০ বেতল ফেনসিডিল সহ গ্রেফতার করে।পুলিশ হেফাজতে তরাশ পুলিশকে জানায় যে আটককৃত ফেনসিডিলের মূল মালিক হলো স্থানীয় মহিলা মেম্বার খুকির ছোট ভাই কবিরের।
স্থানীয়রা জানায়, সকাল হলেই অটোরিকশায় করে এবং কি পায়ে হেটে আলীগঞ্জের মাদকের হাটে মাদক কিনতে দূরদূরান্ত থেকে আসে মাদকসেবীরা। প্রকাশ্য মাদক বিক্রি দেখেও ভয়ে কিছু বলে না স্থানীয়রা,প্রতিবাদ করতে গেলেই নানা ভাবে হয়রানী হতে হয় এই কারনে কেউ প্রতিবাদও করতে চায় না।
স্থানীয়বাসীর সাথে আলাপ করে ও সরজমিনে খোজঁ নিয়ে জানাযায়,উল্লেখিত মাদক ব্যবসায়ী ছাড়া ও আলীগঞ্জ এলাকায় যে সকল মাদক ব্যবসায়ীরা সক্রিয় রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম আলীগঞ্জ রেললাইনের পূর্ব পাশে গাঁজা ব্যবসায়ী খোকা ,মেহারীর ছেলে সোহেল,রেললাইন মসজিদের সাথে আফসার ড্রাইভার, আলীগঞ্জ পূর্বপাড়ার বক্কর মেম্বার এর ভাই শেক্কুয়া,আলীগঞ্জ রেললাইনের পূর্ব পাশে মাদ্রাসা রোডে পোকনের ছেলে জসিম, আলীগঞ্জ রেললাইন মসজিদের পাশে আফসার ড্রইভারের ছেলে ইকবাল ড্রাইভার,আলীগঞ্জ তিন রাস্তার মোড় এলাকার ওয়াসিম,একই এলাকার বারেক এর ছেলে ড্রইভার জুয়েল ও তার ছোট ভাই আহাম্মদ এবং কালা বিল্লাল,ইজ্জৎ মহাজন এর বাড়ীর গল্লিতে সাবু মিয়ার ছেলে চোর শাহীন,একই এলাকার ইসহাক মিস্ত্রীর ছেলে কেপ রুহুল তার ছোট ভাই সজীব এবং বড় জাহানের ছেলে আক্তার,অলী হাজ্বীর ছেলে হাফিজ, আলীগঞ্জ মসজিদ রোডের সালাম ড্রাইভারের ছেলে রাশু,আলীগঞ্জ পাচঁতলার মোড়ে মোল্লার ছেলে মোস্তাকিম,আব্দুল মজিদের ছেলে সল্টু রাসেল,পাচঁতলার আলীগঞ্জ মোল্লা বাড়ীর মৃত আলমাছ মরল এর ছেলে চোল্লা মাসুম,কাজীপাড়ার নাজমুল,মোক্তার, আলীগঞ্জ জং বাড়ী মধ্যপাড়ার মৃত আবুল এর ছেলে লম্বা জুয়েল,জং বাড়ী মধ্যপাড়ার রাজীব,জং বাড়ীর টেবলেট সুমন,আলীগঞ্জ তিন রাস্তার মোড়ের হাইদু,ইসহাক মিস্ত্রীর ছেলে সজীব,আহাম্মদ,আরমান,আলীগঞ্জ মেইন রোডের বিপ্লব, মোফাজ্জল কাজীর ছেলে টার্নিং জুয়েল,আলীগঞ্জ অটো গ্যারেজের ইসলার ছেলে মোটু রুবেল,আলীগঞ্জ স’মিল রোড বাসেদ এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া মৃত আব্দুর সাত্তার মিয়ার ছেলে বাবু ড্রাইভার,স”মিল এর পাশে জরিনার ছেলে সুন্দর রনি,ইজ্জৎ মহাজন এর বাড়ীর গল্লিতে পোটলা রুবেল,বাইট্টা ইমরান,আলীগঞ্জ পাচঁ তলার মোড়ে লেহার নাতি ইমরান, ইলিয়াসের ছেলে আওলাদ, আলীগঞ্জ নতুন বাজারের নাইম সহ আরো অনেকেই নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা করে আসছে।
স্থানীয়বাসীর অভিযোগ, এ সকল প্রতিটি মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে নগদ অর্থের সুবিধা গ্রহণ করে সরকার দলীয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এবং প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তারা তাদের কে নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা করার সুযোগ করে দিচ্ছে। মাদকের সুরক্ষিত গোডাউন বলে পরিচিত আলীগঞ্জ এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে স্থানীয়বাসী।
এব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন বলেন, আমরা সোর্সদের কোন ভাবেই প্রশ্রয় দিচ্ছি না। যে সমস্ত সোর্স অপরাধে জড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতোমধ্যে বেশ কিছু সোর্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
Leave a Reply