নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ৪ বাল্কহেড শ্রমিককে গলাকেটে হত্যা মামলায় ২জনের ফাঁসি ও নয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক সাবিনা ইয়াসমিন এ রায় প্রদান করেন। রায়ে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত দুই আসামী হলো-তাজুল ইসলাম ও মহি ফিটার।
রায়ে শাহপরান বল গেটের মাঝি মাল্লা, নাসির মিয়া, মঙ্গল, ফয়সাল ও হান্নানকে গলা কেটে হত্যা করে বলগেট ডাকাতির অপরাধে দোষী প্রমানিত হয়। মুত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্তদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর এবং পলাতকদের দ্রুত গ্রেফতার করে রায় কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে । রায় ঘোষণার সময় আদালতে ৭ আসামী উপস্থিত ছিলেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামীরা হলেন, চাঁন মিয়া, দুলাল মিয়া, মজিবর, শফিকুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান, আরিফ, জলিল, সাইফুল ইসলাম, দুলাল ও ইব্রাহিম।
আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট কে এম আব্দুর রহমান জানান, ১২ আসামীর মধ্যে আদালত ২ জনকে ফাঁসি ও ৯জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। একজন আসামী মামলা চলাকালীন মৃত্যুবরনকরেন। এ রায়ে রাষ্ট্র পক্ষ সন্তুষ্ট।
মামলার বিবরনে জানা যায়, মামলার বাদী এরসান হিম শাহপরান বলগেট এর মালিক সে বিগত ২২/৯/০৮ ইং তারিখে ফতুল্লা থানায় এই মর্মে এজাহার দায়ের করেন যে, আমি এজাহারকারী। বল গেট ” শাহপরান” এর মালিক। গত ১৯/৯/২০০৮ ইং তারিখ থেকে ২১/০৯/২০০৮ ইং তারিখ এর মধ্যে ঘটনা ঘটে। ঐ সময় সিলেট থেকে পাথর বােঝাই করে আমার এই বলগেট টি মুন্সিগঞ্জের সিমেন্ট কারখানায় আসে। পাথর ঐ কারখানায় খালাস করে দেবার পরে বলগেটটির মেশিন নষ্ট হয়ে যায় ।
বলগেট এর মেশিন ঠিক করার জন্য স্রাসামী মহী মিটার ও আসামী তাজু ফিটারকে বলগেট এর ড্রাইভার নাসির খবর দেয়। শুরা এসে বলগেটটা ঠিক করে টেস্ট করতে গিয়ে চরে তথ্য বাশীর চরে নিয়ে লাগিয়ে দেয় । ইট খােলার পাশে লাগিয়ে দেয়। আমার বলগেটে নাসির মিয়া, মঙ্গল, ফয়সাল ও হান্নান ছিল। বক্তাবলী চরে বলগেটটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় মথন পাই তখন আমার ঐ চার জন কর্মচারীকে পাই নাই পরে যে মেঘনা নদীর চরে হাত পা বাধা অবস্থায় নাসির মিয়ার লস পাই।
মঙ্গলের লাশ ও হাত পা বাধা অবস্থায় পাওয়া যায়। বাকী দুই জন ফয়সাল ও হান্নান এর লাল পাওয়া য়ায়নি। বলগেটটা না পেয়ে আমি তখন দিনে থানায় জিডি করি । লাশ পেয়ে আমি বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করি।
এই সেই এজাহার (প্রদর্শনী-১) এই আমার স্বাক্ষর (প্রদর্শনী-১/৯) পরে পুলিশ আমার বলগেট’টা জব্দ করে। ওই দিনই এস,আই বদরুল আলমকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (ফতুল্লা থানার তৎকালীন এস,আইও বর্তমান যশোর শর্শা থানার ওসি)বদরুল আলম বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আসামীদের গ্রেফতার করেন। এর মধ্যে আসামী জলিল, লম্বা দুলাল , ইব্রাহিম , খাটো দুলাল মিয়া , মজিবর , শফিকুল ইসলাম , তাজুল ইসলাম ও আরিফ ১৬৪ ধারায় স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। তদন্ত শেষে ১২ জন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জসীট দাখিল করেন। ২৬/৩/০৯ চার্জসীট গৃহিত হয়।
২১/০৪/২০১৯ সালে পরবর্তীতে মামলাটি আদালতে বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য বদলী হলে বিচারক বাদী এরসাদ মিয়া, ম্যাজিষ্টেট, সুরতহাল, আই,ও সহ ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন করে এবং উপস্থাপিত কাগজপত্র প্রদর্শনী ভূক্ত করে উপরােক্ত রায় প্রদান করেন বলে জানিয়েছেন আদালতের পিপি।মামলাটি তদন্ত করেন ফতুল্লা থানার তৎকালীন এস,আই(সেকেন্ড অফিসার) ও বর্তৃান যশোর শর্শা থানার ওসি বদরুল আলম খান।
Leave a Reply