রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৩ অপরাহ্ন
আবদুর রহিমঃ ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে ঘিরে সরব হয়ে উঠেছে ফতুল্লার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ ১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কাউন্সিলকে ঘিরে দলের অনেক পুরনো এবং ত্যাগী নেতারা আশাবাদী হয়ে উঠেছে প্রত্যাশিত পদ পাওয়ার ব্যাপারে। আওয়ামী লীগে ঠাঁই পেতে চলছে লবিং। এই কাউন্সিলকে ঘিরে অনেক নেতাই তাদের প্রত্যাশিত পদ পেতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের সক্রিয় এবং ত্যাগী নেতাকর্মীদের দাবি, নতুন করে গঠিত হতে যাওয়া ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগে দলের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাদের স্থান দেয়ার। পাশাপাশি হাইব্রিড এবং নব্য আওয়ামী লীগারদের দলে যেন স্থান দেয়া না হয় এ বিষয়টি আরো জোড়ালো হচ্ছে। তৃনমূল থেকে দাবি উঠেছে, আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের থানা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ন পদে অধিষ্ঠিত করা। অন্যদিকে আওয়ামী লীগকে যারা বিতর্কীক করার চেষ্টা করেছিলো কিংবা করার চেষ্টা করছে সে সমস্ত নেতাদের থেকে থানা আওয়ামী লীগকে রক্ষা করার। স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা বিতর্কীত এবং নব্য আওয়ামী লীগারদের দলে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ শুরু করেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে। তবে আওয়ামী লীগের তৃনমূলের দাবি, পরিচ্ছন্ন নেতাদের সমন্বয়ে থানা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন প্রয়োজন। তা হলেই আগামীতে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক ভাবে আরো শক্তিশালী হবে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে ঘিরে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগে স্থান করে নিতে চেষ্টা করছেন কিছু নেতা। তৃনমূল থেকেও দাবি উঠছে, দলের দুঃসময়ে যারা আওয়ামী লীগের জন্য অবদান রেখেছে, সে সব নেতাদের আওয়ামী লীগে স্থান দিয়ে তাদের অবদানের স্বীকৃতি দেয়ার। আওয়ামী লীগে সভাপতি,সাধারন সম্পাদকসহ অন্যান্য পদেও দলের ত্যাগী নেতাদের স্থান দেয়ার দাবি উঠেছে। পাশাপাশি বিতর্কীত নেতাদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছে।
এদিকে, ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে এবং এসিডে জ¦লসিয়ে হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী বরিশাইল্যা টিপুকে রক্ষায় মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ নেতা হাবিব। এমনকি টিপুকে দলে পদ দিয়ে আওয়ামী লীগে প্রতিষ্ঠিত করারও মিশন রয়েছে হাবিবের এমন অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। ইতোমধ্যে তাকে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যদের তালিকা ভূক্ত করেছে। এ নিয়ে ফতুল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে তুমুল সমালোচনা চলছে। চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে দলের সক্রিয় এবং ত্যাগী নেতাদের মধ্যে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ নেতা মুন্না হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী ও নব্য আওয়ামী লীগের রফিকুল ইসলাম টিপু অরুফে বরিশাইল্যাই টিপু আওয়ামী লীগে প্রতিষ্ঠিত করা হলে এটা দলীয় কর্মীর সাথে বেঈমানী হবে। তবে থানা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা এ বিষয়টি পর্যবেক্ষন করছে বলেও আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি প্রাথমিক তালিকা পর্যালোচনা করে বিতর্কীত ব্যাক্তিদের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হবে বলেও ওই সূত্রটি জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে ঘিরে গত কয়েক মাস ধরে ফতুল্লার বিভিন্ন ইউনিয়ন,ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সদস্য ফরম বিতরণের মধ্যদিয়ে থানা আওয়ামী লীগকে নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের কিছু নেতা দলে বিতর্কীদের স্থান করে দিতে নানা অপ তৎপরতা শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে ফতুল্লা পোষ্ট অফিস রোডের বিতর্কীত বরিশাইল্যা টিপুকে ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের(৪৫ নং) প্রাথমিক সদস্য করা হয়। আর এ কাজের সাথে জড়িত রয়েছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিব। গুঞ্জন রয়েছে, হাবিব টিপুর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাকে আওয়ামী লীগে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পরেছে টিপু ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হচ্ছে। তবে থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল্লাহ বাদল বলেছেন ২০০৮ সালের পর যারা আওয়ামী লীগে এসেছে তাদের কোন পদ দেয়া হবে না। একই কথা বলেছেন থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এম শওকত আলী। উল্লেখ্য, গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে বরিশাইল্যা টিপু ও তার সহযোগীরা পোস্ট অফিস রোডের রেললাইন বটতলা এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা মুন্নাকে কুপিয়ে এবং এসিড দিয়ে জ¦লসিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা হয়। টিপু গ্রেফতারের দাবিতে আদালত প্রাঙ্গনসহ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে একাধিক মানববন্ধন হয়। বর্তমানে টিপু পুলিশের তালিকায় পলাতক আসামী।
Leave a Reply