শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন

ফতুল্লা-পাগলা-আলীগঞ্জে শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী সক্রিয় !

নারায়ণগঞ্জের খবরঃ মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার হারুণ অর রশিদের কঠোরতার পরও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ফতুল্লার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা। থেমে নেই তাদের মাদক ব্যবসা। ফতুল্লার বিশাল একটি অঞ্চলের মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছে আলোচিত ডাকাত এবং পুলিশের কথিত সোর্সরা। দীর্ঘদিন ধরে বিশাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই অঞ্চলের মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে এসব ডাকাত এবং সোর্সরা। জেল হাজত থেকে ছাড়া পেয়ে অনেকে এই সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়েছে বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে। যারা মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক ডাকাতি, হত্যা,পুলিশের উপরে হামলা ও মাদকের মামলা। আর এই সিন্ডিকেটকে নানা ভাবে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে বিশেষ পেশার বেশ কিছু ব্যাক্তির বিরুদ্ধে। ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন জানিয়েছেন, মাদক ব্যবসার সাথে যে জড়িত থাকুক কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

সচেতন মহলের মতে, পুলিশ সুপার মাদক,সন্ত্রাস ও ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে যখন জিহাদ ঘোষণা করেছে, ঠিক তখনই এসব ডাকাত ও সোর্সরা পুলিশকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে তাদের মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এরফলে পুলিশের ইমেজ ক্ষুন্ন হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে এসব মাদক ব্যবসায়ী ডাকাত ও সোর্সদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী বলে মনে করছেন ফতুল্লার সচেতন মহল। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।

বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, ডাকাতি,পুলিশের উপর হামলা, হত্যা, মাদকসহ প্রায় ১৪টি মামলার আসামী ফতুল্লা ষ্টেশন, ব্যাককলোনী এলাকার ওহাব মিয়ার ছেলে ডাকাত রনি। যিনি নিজেকে পুলিশে সোর্স পরিচয় দিয়ে পুলিশের কিছু কর্মকর্তার সাথে সখ্যতা রেখে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। ডাকাত রনি ডিবি পুলিশের হাতে বিপুল পরিমান মাদকসহ গ্রেফতারের পর গত এক মাস আগে জামিনে এসে আবারো মাদক ব্যবসা শুরু করেছে। মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে ডাকাত রনি, টুটুলের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। আর এই সিন্ডিকেটে রয়েছে ডাকাত লিপু ওরুফে বোমা লিপু, আমীর হোসেন পিচ্ছু, ডাকাত শাহিন, সোর্স পান্না, সোর্স সোহাগ, টিকিমারা লিটন,দিপু, ডাকাত কবির হোসেন ফেলা।

আর এই সিন্ডিকেটের আওতায় রয়েছে লালখার শামীম,স¤্রাট, বোন স্বপ্না, রাসেল, পাইলটস্কুল বেপারী পাড়ার রবিন, সুকানী সুমন,বাংলা খোকনের পুত্র সোহান, ষ্টেশনের মাইছ্যা সোলমানের পুত্র রুবেল,ওলুর ছেলে শুভ ওরুফে বাবা শুভ, জনি ওরুফে চোরা জনি,পারভেজ ওরুফে হাক্কানী পারভেজ, বিথী, শুভ ওরুফে লম্বু শুভ,মাইছ্যা শাহজাহানের পুত্র শাহজুল, ছোট রাজু, রেইবোর মোড় এলাকার জনু, কানা রফিকের ছেলে মোল্লা রাসেল, ইকবাল, সানু, ডাকাত রেহান, রাজিবসহ প্রায় অর্ধশত সেলস্ম্যান। আর এই মাদক ব্যবসায়ীদের মাল বহন এবং সরবারহ করে থাকে ডাকাত রনির বউ সালমা। এদের কাউকে আবার পুলিশের সাথে বিভিন্ন অভিযানে দেখা যায়। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানাগেছে, সোর্স ডাকাত রনি, সোর্স পান্না এবং সোর্স সোহাগ নিজেদের স্বার্থ হাসিলে থানা ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বেশ কিছু সদস্যদের সাথে সখ্যতা রেখে প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের আড়াল করতে বেশ কিছু সেলস্ম্যান ও মাদক সেবীদের মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এছাড়া এই তিন সোর্সকে টিকি মারা লিটনসহ ফতুল্লার বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতা রয়েছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়। এছাড়াও ফতুল্লার সরদার বাড়ি এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ইলিয়াস ডাইং ব্যবসার আড়ালে সরদার বাড়ি এলাকার ডাকাত ইয়াসিনের সাথে যৌথ ভাবে কয়েক বছর ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে।

অপরদিকে, ফতুল্লার আলীগঞ্জ এলাকায় সল্টু রাসেল,কাইল্যা মাসুম,মোস্তাকিন, সাঈদ, রুবেল, শান্ত, ভাগ্নে মামুন, আক্তার শাহিন, আরমান সোর্স আইনুল, জালাল,খোকা,মোক্তার সালাউদ্দিন,বরকি শাহিন,জুয়েল,উজ্জ্বল, পাগলা এলাকার শাহ আলম,জাহাঙ্গীর, শরীফ,ঘাট রুবেল,মোক্তার,শিল্পী,মিথুন,সানজিদ,উত্তম, কামাল,ইকবাল,শিলা। দাপা এলাকায় ডাকাত জাকির,আনোয়ার কাজী,আলী দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে।

এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলামা হোসেন জানান, আমরা মাদক ব্যবসায়ী কিংবা কোন অপরাধীকে ছাড়া দিচ্ছি না। আমরা সমাজকে মাদক মুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা বেশ কিছু অস্ত্রবাজ, মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন...

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Comments

    © All rights reserved © 2023
    Design & Developed BY M Host BD