১. আমার মৃত্যু ভাবনা
শেষ নিঃশ্বাসটা হয়তো আমার
কাউকে ভাবতে ভাবতে বেড়িয়ে যাবে।
মৃত্যু ঘন্টাটা হয়তো আমার
কারো চোখে চোখ রেখে
তাকিয়ে থাকতে থাকতে বেজে যাবে।
মৃত্যুর বার্তাটা হয়তো আমার
কারো খোঁপা বেঁধে দিতে দিতে এসে যাবে।
মৃত্যুর চিরকুটটা হয়তো আমার
কারো বেণী গেঁথে দিতে দিতে এসে পৌঁছাবে।
যমদূত হয়তো আমার কাছে আসবে তখন
যখন আমি অতি যত্নে কাউকে
চুড়ি পড়িয়ে দিতে থাকবো।
মরণ হয়তো আমাকে স্পর্শ করবে তখন
যখন আমি হাত দুটো কারো হাতে রাখবো।
মৃত্যুটা হয়তো আমার হবে তখন
যখন কারো পাশাপাশি হাঁটবো।
আমি নিশ্চিত! মৃত্যুটা হবে আমার ঠিক তখনই
যখন কারো মায়ায় পড়ে
আর মরতে চাইবো না.. .
_
২. সাক্ষী যত
বুক পকেটে গোজা কলম, চশমার কাঁচ
মুঠোফোনের খুদেবার্তা, হাতে ঝুলন্ত ঘড়ি
যত্নের সাথে অযত্নে পরে থাকা
ডায়রির অপূর্ণ পাতা,
অবিরাম নিঃশেষ হতে থাকা
নিকোটিনের শলাকা
আর অর্ধলেখা যত কবিতা সাক্ষী!
ভালো আছি।
রাতের গাঢ় অন্ধকার, ল্যাম্পোস্টের শান্ত আলো
হাঁটার ধরন, নিঃশ্বাসের গতি, চোখের পলক
শহরের বুকে লেপ্টে যাওয়া গ্রাম্য নীরবতা
আর পাথরে ঢালাই পথ সাক্ষী!
ভালো আছি।
নিত্য একলা বলা কথাগুলো
চোখের কার্নিশে বহুকাল ধরে লেগে থাকা
কালচে রঙের সূক্ষ্ম প্রলেপ
আর এই লেখার শব্দগুলো সাক্ষী!
ভালো আছি !
সবশেষে ভালো আছি, অবশেষে ভালো আছি
পরিশেষেও বলছি ভালো আছি!
সাক্ষীরা সত্য বললে,
আমি মিথ্যা হবো সহজেই.. .
_
৩. একতরফা
সুখহীনতাই সুখ আমার
দুঃখই আমার পরম পাওয়া,
দুখের ছন্দেই কাটুক জীবন
একজীবনের চরম চাওয়া।
সুখ পেলেই তো লোভ বাড়ে !
ওটা না হয় বা নাই পেলাম,
এক তরফা দুঃখ পেয়েই
একটা জীবন কাটিয়ে গেলাম।
সুখটা এখন যার অধীন
তার অধীনেই করুক বাস,
সুখীজনরা থাকুক সুখেই
আমারই হোক সব সর্বনাশ!
_
৪. কবি ও কবিতা
খুব করে চাও যদি ছড়াক সূর্যকিরণ
তবে হবে হারাতে ভোরের শিশির।
রাখতে যদি চাও ধরে, আপন করে
শুনতে যদি চাও অবিরাম বৃষ্টির গান
তবে ছাড়তে হবে রৌদ্রজ্জ্বল দিনের মোহ।
নিতে জানলেও একসাথে অনেক
দিতে জানে না জীবন একসময়ে সব।
এপাশ তলিয়েই ওপাশ ভাসে
একটা হারিয়েই অন্যটা আসে।
অনেক কালের দরিয়া সাতরে
দেখছি মূলত এমনটাই ঘটে;
কবির কবিতা যত গোছালো
জীবন তত অগোছালো বটে.. .
Leave a Reply