নারায়ণগঞ্জের খবর: করোনা সংকট চলাকালে সাধারণ ছুটির সময় যে সকল গার্মেন্টস শ্রমিক নিজ জেলা শহরে গেছে এবং গার্মেন্টস খোলার পর কাজে যোগ দিতে পারেনি তাদেরকে এপ্রিল মাসে ৬০ শতাংশ এবং আর যারা কাজে যোগদান করেছেন তাদেরকে পূর্নাঙ্গ বেতন প্রদান করা হবে। তবে শ্রমিক নেতাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে মে মাসের বেতনের সাথে এপ্রিল মাসের বেতনে ৫শতাংশ যুক্ত করে সমন্বয় করা হবে। এই ৫ শতাংশ বেতন যুক্ত করার বিষয়টি মে মাসের ১০-১৫ তারিখের মধ্যে শ্রম মন্ত্রনালয়ে আরো একটি আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে।

সোমবার দুপুরে শ্রম ভবনে শ্রম-প্রতিমন্ত্রীর সাথে গার্মেন্টস মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সাথে ত্রিপক্ষীয় জরুরি সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে।

সভায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নু জান সুফিয়ান এর সভাপতিত্বে বিকেএমইএ এর পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি নারারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এম.পি ও বিকেএমইএ’র প্রতিনিধিত্ব করেন বিকেএমইএ সভাপতি এ.কে.এম সেলিম ওসমান এম.পি.। এছাড়াও এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি জনাব এ.কে আজাদ, বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক, বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি সালাম মুর্শেদী, এম.পি, শিল্প পুলিশের মহাপরিচালক আব্দুস্ সালাম, পিপিএম, বিকেএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু এবং গার্মেন্টস সেক্টর সংশ্লিষ্ট অন্যন্য শ্রমিক নেতৃবর্গসহ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সাম্প্রতিককালে গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক যেসমস্ত শ্রমিক করোনা সংকট চলাকালে নিজ জেলা শহরে গেছেন এবং কাজে যোগ দিতে পারেনি তাদেরকে ৬০শতাংশ বেতন প্রদানের বিষয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সৃষ্ট জটিলতা সমাধানে দীর্ঘ সময় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। বিশেষ করে, শ্রমিক নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত তাদের পর্যবেক্ষন তুলে ধরেন।

যার পরিপ্রেক্ষিতে বিকেএমইএ সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান বলেন, এ সময়ে ক্রয়াদেশ না থাকার কারণে অনেক মালিকের পক্ষে এই ৬০শতাংশ বেতন প্রদান করাও কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। যেখানে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে ৫০শতাংশ, জার্মানিতে ৬৬শতাংশ বেতন প্রদান করছে এবং অনেকগুলো দেশ বেতন প্রদান করতে পারছেনা, এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় গার্মেন্টস সেক্টরে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রনোদনা প্রদান করায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাদের ৬০ শতাংশ বেতন প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তকে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে আমরা মনে করি। দেশের অর্থনীতি ও শিল্পের স্বার্থে শ্রমিক-নেতৃবৃন্দকে শিল্পের বর্তমান ক্রান্তিকালের কথা বিবেচনায় নিয়ে ৬০শতাংশ বেতন প্রদানের সিদ্ধান্তে ঐক্যমত পোষণ করার আহবান রাখছি। পাশাপাশি আমরা এটাই আশ্বস্ত করতে চাই এই অবস্থায় কোন শ্রমিক ছাটাই করা হবেনা। আর যদি কোন গার্মেন্ট যদি শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ না করে তাহলে এই বিষয়টিও যেন আমাদেরকে অবগত করা হয়।

এমন প্রেক্ষাপটে বিজিএমইএ, শ্রমিক-নেতৃবৃন্দ, সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী তথা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ বিকেএমইএ সভাপতি মহোদয়ের বক্তব্যের আলোকে পুরো বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে নি¤েœাক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন

১। পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাবৃন্দ এপ্রিল’২০ মাসে যেসব শ্রমিক করোনা সংকট চলাকালে নিজ জেলা শহরে গেছেন এবং কাজে যোগ দিতে পারেনি তাদেরকে ৬০শতাংশ বেতন প্রদান করবে। আর যারা কাজে যোগদান করেছেন তাদেরকে পূর্ণাঙ্গ বেতন প্রদান করবে।

২। শ্রমিক নেতৃবৃন্দের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে মে’২০ মাসের বেতন প্রদানের সময় ৬০শতাংশ এর সাথে এপ্রিল মাসের ৫শতাংশ যুক্ত করে যেসকল শ্রমিক কাজে যোগদান করতে পারছে না তাদেরকে ৬৫শতাংশ বেতন প্রদান করবে। তবে, এ বিষয়ে মে’২০ মাসের ১০-১৫ তারিখের মধ্যে শ্রম মন্ত্রণালয়ে আরও একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখানে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।