October 4, 2023, 12:24 am
ডেস্ক নিউজঃ অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী সেলিম প্রধানের অর্ধশত ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এছাড়া থাইল্যান্ডে সেলিম প্রধানের মালিকানাধীন প্রধান গ্লোবাল ট্রেডিং, এশিয়া ইউনাইটেড এন্টারটেইনমেন্ট, তমা হামে পাতায়া কোম্পানি লিমিটডেটসহ সাতটি কোম্পানির সন্ধান পাওয়া গেছে। সোমবার (০৯ নভেম্বর) দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্রে এ জানা গেছে।
এ বিষয়ে দুদক কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, সেলিম প্রধানের স্থাবর সব সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। তার অর্ধশত ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়েছে। কত টাকা পাচার হয়েছে সে সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আগে বলা সমীচীন হবে না। টাকার উৎসও এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করা বলা যাচ্ছে না। তবে ক্যাসিনো ব্যবসা এসব টাকার উৎস হতে পারে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে চার্জশিট কমিশনে উপস্থাপিত হবে। শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে আসবে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, থাইল্যান্ডে সেলিম প্রধানের মালিকানাধীন প্রধান গ্লোবাল ট্রেডিং, এশিয়া ইউনাইটেড এন্টারটেইনমেন্ট, তমা হামে পাতায়া কোম্পানি লিমিটেডসহ সাতটি কোম্পানির সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া ব্যাংকক ব্যাংক ও সায়েম কমার্শিয়াল ব্যাংকে ২০ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেপি মর্গান ব্যাংকে সেলিম প্রধানের দুটি ব্যাংক হিসাবে আর্থিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে ৩.৬১ কোটি টাকার উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ টাকা থাইল্যান্ডে পাচারের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সেলিম প্রধান লাস ভেগাসে ক্যাসিনো খেলতেন এবং কয়েক কোটি টাকা দিয়ে ক্যাসিনো চিপস লাস ভেগাস থেকে ক্রয় করেছিলেন, এমন তথ্য দুদকের হাতে রয়েছে।
সূত্রে আরও জানা যায়, টাকা উদ্ধারে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্টসহ (এমএলএআর) অন্যান্য আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। একাধিক দেশে (আমেরিকা ও থাইল্যান্ড) এমএলএআর পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর সেলিম প্রধানের ২৭ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয় তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সংস্থাটির উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের অনুরোধে।
১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে গত ২৭ অক্টোবর সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। এরপরই সেলিম প্রধানকে সাত দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত কর্মকর্তা। রিমান্ডে দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরেই পাচারের তথ্য পাওয়া যায় বলে জানা গেছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, মামলার তদন্তের সময় সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে অনলাইন ক্যাসিনো খেলার প্রমাণ পেয়েছে দুদক এবং এর মাধ্যমে সেলিম প্রধান প্রায় ১৩ কোটি টাকা উপার্জন করে তা পাচার করেছেন মর্মে দুদক প্রমাণ পেয়েছে। এছাড়া থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ব্যাংক, দি সায়েম কর্মাশিয়াল ব্যাংকে সেলিম প্রধানের ২০ কোটির টাকার বেশি অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়।
২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সেলিম প্রধানকে আটক করে র্যাব-১। এরপর তার গুলশান, বনানীর বাসা ও অফিসে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ২৯ লাখ টাকা, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ এবং বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও হরিণের চামড়া জব্দ করা হয়। হরিণের চামড়া উদ্ধারের ঘটনায় ঐ দিনই সেলিম প্রধানকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
Leave a Reply