নারায়ণগঞ্জের খবর: নারায়ণগঞ্জের বেতনের দাবিতে পৃথক স্থানে  সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।  বৃহস্পতিবার শহর ও রূপগঞ্জে বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে দুইটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। রাস্তায় টায়ারে আগুন জ্বালানোসহ পুলিশের সাথে দফায় দফায় ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এতে আহত হয়েছে কমপক্ষে ১০ জন শ্রমিক।

প্রত্যক্ষদর্শী ও রুপগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসবার বরপা এলাকায় দুই অন্তিত নিটিং ডাইং এন্ড কমপোজিট কারখানার দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। তারা কারখানার আসবাবপত্র ব্যাপক ভাংচুর করে প্রোডাকশন ম্যানেজারকে মারধরও করে। গত এক মাসে এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। দুপুর থেকে শ্রমিকরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবস্থান নিলে মহাসড়কে বিভিন্ন খাদ্য পণ্যবাহি যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।

বিক্ষোভরত শ্রমিকদের দাবি, মালিকপক্ষ কয়েকবার আশ্বাস দিয়েও দুই হাজার শ্রমিকের দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করছে না। বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের বেতন দেয়ার কথা ছিল। না দেয়ায় বাধ্য হয়ে আবার আন্দোলনে নামেন তারা।

পরে শিল্প পুলিশ এবং রুপগঞ্জ থানা পুলিশ শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের উপত আক্রমনাত্বক হয়ে উঠে শ্রমিকরা। দফায় দফায় ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে শ্রমিক পুলিশের মধ্যে। এতে ১০ শ্রমিক আহত হন বলে দাবি করেন শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে এক পর্যায়ে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে শ্রমিকরা ছত্রভংগ হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশ-৪ এর ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন জানান, অন্তিম নিটিং ডাইং মালিকপক্ষের সাথে কথা বলে শ্রমিকদের আশ্বাস দিলেও তারা মানেনি। পরে পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করে রাস্তা থেকে সড়িয়ে দেয়। তবে কেউ আহত হয়েছে বলে তার কাছে অভিযোগ আসেনি।

এদিকে একই দাবিতে শহরের চাষাড়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে সিদ্ধির গঞ্জের গোদ নাইল এলাকার আলপাইন নীট ফেব্রিক্স লি. এর শ্রমিকরা। এখানেও আজ ২ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের কথা ছিল। মালিকপক্ষ দফায় দফায় বেতন দেয়ার আশ্বাস দিলেও না দেয়ায় বিকেল চারটা থেকে সড়কে অবরোধ করে শ্রমিকরা। পরে শিল্প পুলিশ ও সদর থানা পুলিশ শ্রমিক দের নানাভাবে শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

শ্রমিকদের দাবি, দুই মাসের বেতন বকেয়া রেখে গত ২৫ মার্চ কারখানা বন্ধ করে দেন মালিকপক্ষ। এরপর কয়েক দফায় বেতন কথা বলেও কথা তাখেন। আজ বেতন না দেয়ায় তাদের মধ্যে এই অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে চাষাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মালিকপক্ষ আগামী ১২ মে বেতন পরিশোধের লিখিত অংগীকার দিলে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ তুলে নেয়।