আবদুর রহিমঃ কালো পানিতে নিভতে বসেছে শিক্ষার আলো। দীর্ঘ চার বছর ধরে ফতুল্লার একটি উচ্চ বিদ্যালয় এবং একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারপাশ ঘিরে আছে বিভিন্ন ডাইং কারখানার ক্যামিকেল মিশ্রিত কালো, বিষাক্ত, বর্জ্য পানি। ফলে দিনে দিনে বিদ্যালয়ে আসা কমিয়ে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা জীবন থেকে অকালে ঝরে যাচ্ছে অগনিত শিক্ষার্থী। বলছি ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং সেহাচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের এই ভোগান্তি দূর করতে কেউ উদ্যোগ নিচ্ছে না। এমনকি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী মহলের অভিযোগ,দীর্ঘদিন ধরে কৃত্রিম জলাবদ্ধতার কারণে স্থানীয় বাসিন্দা এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চর্মরোগসহ পানি বাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দীর্ঘদিনের এই সমস্যা সমাধান করা জরুরি। ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ঈশিতা জানায়, দীর্ঘ ধরে কেমিক্যাল মিশ্রিত কালো পানি দিয়ে নিয়মিত ক্লাস করতে হচ্ছে। এরফলে চর্মরোগসহ নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং সেহাচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। ভুক্তভোগীরা বলেন, দীর্ঘ চার বছর ধরে পোস্ট অফিস রোডে অবস্থিত ইউজডম,পপুলার ডাইং,দীপ্তি ডাইং,মদিনা ডাইংসহ অন্যান্য ডাইং ফ্যাক্টরীর ক্যামিকেল মিশ্রিত বর্জ্য পানি ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় কৃত্রিম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারকে জলাবদ্ধতার বিষয়টি জানালেও কোন সমাধান করেনি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী,পথচারী ড্রেনে পরে গুরুতর আহত হয়েছেন। বিষাক্ত পানির কারণে চর্মরোগসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন এবং ইউপি সদস্য আঃ বাতেনকে একাধিক বার জানালেও তাঁরা সমস্যা নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এই সমস্যা সমাধানে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান ও ৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সবমিলিয়ে বর্তমানে এই রাস্তাটি চলাচলের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে এই পানির কারণে আমারদের বিদ্যালয় থেকে প্রায় ৯শ শিক্ষার্থী চলে গেছে। যদি এটা কর্তৃপক্ষের নজরে যায় তাহলে এ সমস্যার সমাধান হবে। অন্যথায় মনে করতে হবে এটা আমাদের জন্য অভিশাপ।
এ বিষয়ে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন বলেন, এই রাস্তায় আগে পানি ছিল না। পাশে রেলওয়ের কাজ চলমান থাকায় আউটলোড বন্ধ হয়ে গেছে। পানি বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পানি সরছে না। তবে আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি খুব দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে।
Leave a Reply