শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন

ফতুল্লায় বিআইডব্লিউটি’র অভিযানে অর্ধশত বৈধ-অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

নারায়ণগঞ্জের খবরঃ ফতুল্লায় বৈধ স্থাপনা অবৈধ ভাবে উচ্ছেদ করার অভিযোগ উঠেছে বিআইডব্লিউটিএর বিরুদ্ধে। নদীর সিমানার বাইরে এসে তারা বিনা নোটিশে এই অভিযান চালিয়েছে এমন অভিযোগ বেশ ক’জন ভুক্তভোগীর। অভিযোগ রয়েছে, এখানে দীর্ঘদিন ধরে নদী দখল করে বালু ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়ে বছরের পর বছর ধরে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল। স্থানীয়দের দাবি, নদীরতীর দখল করে যারা আর্থিকে সুবিধা নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হোক।

রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা এই অভিযানে অবৈধ স্থাপনার পাশপাশি বেশ কিছু বৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বিআইডিকব্লউটি এমন অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযানটি পরিচালিত হয়।

বিআইডিকব্লউটি’র উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত রনজিৎ ফামের্সীর মালিক সাংবাদিক এবং অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রনজিৎ মোদক জানান, আমি পেশায় একজন সাংবাদিক। আমিও জানি নদী দখল করা অন্যায়। কিন্তু আমি এখানে ভাড়ায় দোকান করছি দীর্ঘদিন ধরে। এর আগেও অনেক বার উচ্ছেদে এসেছে। কিন্তু তখন তারাই এটা উচ্ছেদ করেনি যে তাদের নদীর সীমানায় পড়েনি। এবারই তারা এসে হঠাৎ করে ভাঙতে শুরু করেছে। এর আগে কোন নোটিশ দেয়নি। মাত্র ১ ঘণ্টা সময়ে চেয়েছি মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য সেটুকুও দেয়নি। দোকানে কয়েক লাখ টাকার ওষুধ সহ আসবাবপত্র ছিল। সব নষ্ট করে ফেলেছে। আমি পথে বসা ছাড়া আর কোন কিছু নেই।

মনির সু স্টোরের মালিক মনির জানান, এর আগেও বিআইডব্লিউটিএ এখানে অভিযান চালিয়েছে কিন্তু কখনো আমার দোকান উচ্ছেদ করেনি। কিন্তু এবার বিনা নোটিশে কি কারণে এই অভিযান চালিয়েছে তা আমরা জানিনা। এমন অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কিছু ব্যবসায়ীর।

স্থানীয় বেশ ক’জন বালু ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ফতুল্লার আলোচিত-সমালোচিত আলাউদ্দিন হাজী দীর্ঘদিন ধরে ফতুল্লার গরুহাট সংলগ্ন নদীর তীর তাদের লিজ রয়েছে দাবী করে বালু ব্যবসায়ীদের কাছে মোটা অংকের টাকা অগ্রীমের মাধ্যমে ভাড়া দিয়েছে।  বালু ব্যবসায়ীরা আলাউদ্দিন হাজীর ছেলে আক্তার ও সুমনকে মাসিক ভাড়া দিয়ে এখানে ব্যবসা করে আসছে।

একাধিক সূত্রে জানাগেছে, আলাউদ্দিন হাজীর ছেলে আক্তার ও সুমন এই ঘাটের নিয়ন্ত্রক হিসেবে ব্যবসায়ীদের কাছে পরিচিত। গত বৃহস্পতিবার বিআইডিকব্লউটিএর এক কর্মকর্তা সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে যাওয়ায় রোববার এই অভিযান চালানো হয় এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পাশপাশি বৈধ স্থাপনাও গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নদীর নির্ধারিত সীমানার অভ্যন্তরে যারা অবৈধভাবে নদী দখল করেছে, উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিএ ঢাকা নদী বন্দরের উপ পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, ফতুল্লা লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকায় কিছু সংখ্যক প্রভাবশালী ব্যক্তি নদীর তীর ভরাট করে অবৈধভাবে বালু, পাথর ও ইটের ব্যবসা করতো। রোববার ওইসকল অবৈধ দখলদারদের সহ খেয়াঘাট পর্যন্ত অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন...

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Comments

    © All rights reserved © 2023
    Design & Developed BY M Host BD